Monday, February 2, 2015

ইন্টারস্টেলার

নোলানের ফিল্মের একটা চরম কুপ্রভাব আছে । একটা দেখার পর মাসখানেক আর অন্য কিছু দেখতে ইচ্ছা হয়না । বাকি সব অনর্থক লাগে । মুখে রুচি নাই । মাসটা ওয়ার্ল্ডকাপ দেইখা পার করলাম ।

২০১৩র শুরুর দিকে ইন্সেপশন দেখি । পয়লা দেইখা কিছুই বুঝলামনা । ২য় বার আরও বেশি বুঝলামনা । ৩য়বার কিছু বুঝলাম । ৪র্থ বার পুরা বুঝলাম । ৫ম বার আরেকবার দেখলাম বেশি বোঝার জন্য । বেশি বুঝতে গিয়া দেখলাম পাগল হইয়া গেছি । ২-১ সেকেন্ডের লাইফটা ৬০-৭০ বছর লাম্পা হইতাছেনাতো রিলেটিভিটির মত , রাবারের মত টাইন্যা বড় হইতাছে নাতো ? স্বপ্নে আছি সেইটাতো কনফার্ম কিন্তু কয় নাম্বার স্বপ্নে ? নিজের স্বপ্নে না মাইনষের স্বপ্নে ? টেস্ট যে করুম আমার টটেম কই ?
২০১৫ সালের শুরু । ইন্টারস্টেলার । কাল্পনিক ওয়ার্মহোল চমৎকার ছিলো । ভাবছিলাম ওয়ার্মহোল জাস্ট একটা ফুটার মত । কিন্তু কেন না সেইটা মুভিতে দেইখেন । মুভির শেষ আধঘন্টা আগ পর্যন্ত সব পানির মত ফকফকা । গণ্ডগোল হইলো ব্ল্যাকহোলে ঢুইকা । ওয়ার্মহোলেরতো তবু একটা ধারণা আছে কিন্তু ব্ল্যাকহোলের ভিত্রে কি আছে/ঘটে কেউ জানে না । সিঙ্গুলারিটিতে ফিজিক্সের বেইল নাই । এইজন্য পাঠ্যপুস্তক হইতে ফিজিক্স উঠাইয়া দেওয়া সময়ের দাবি । তো ম্যাককোনাহে স্পেসশিপ নিয়া ঢুকে ব্ল্যাকহোলে , গ্র্যাভিটেশনাল পুলরে এড়ায়া সিঙ্গুলারিটিতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত স্পেসশিপসহ টিক্কা থাকে,ঠিক সিঙ্গুলারিটির আগে স্পেসশিপ ভাঙ্গে এবং সে সিঙ্গুলারিটিতে ঝাঁপ দেয় । সিঙ্গুলারিটিতে ইনফিনিট ডাইমেনশন থাকায় একটা এক্সট্রা ডাইমেনশনাল টেসেরেক্টের ভিত্রে যাইয়া পড়ে যেইখানে সময়রে একটা ফিজিক্যাল ডাইমেনশন হিসাবে দেখানো হয় এবং নানান রকম সময়রে উপস্থিত করা হয় । গ্র্যাভিটি দিয়া মোর্স কোডে মেসেজ পাঠায়া গ্র্যাভিটির ইকুয়েশন সল্ভ কইরা তা আরেক টাইমে পাঠাইয়া দেখানো হয় যে গ্র্যাভিটি টাইমসহ ভিন্ন ডাইমেনশন থেকে আরেক ডাইমেনশনে যাইতে পারে । এই ১৭ মিনিটের দৃশ্য এক অনন্যসাধারণ দৃশ্য । এক ভয়ংকর মহাজাগতিক দৃশ্য । অন্তরীক্ষের বিপুল প্রশ্নের উত্তর মিলেমিশে একাকার হয়া যাওয়ার দৃশ্য ।ফিফথ ডাইমেনশনের ভেতর থ্রি ডাইমেনশনের কাল্পনিক দৃশ্য , আবছা ইনফিনিটি ডাইমেনশন । কে জানি কইছিলো ক্লোজ ছোটভাই আইন্সটাইন নাকি ১৩ ডাইমেনশন পর্যন্ত কল্পনা করতে পারতো । আমার থ্রি ডাইমেনশন কল্পনা করতেই জান বাইরায় যায় tongue emoticon । সেইখানে ফিফথ ডাইমেনশনে টাইমরে কাল্পনিক দৃশ্যে স্বচক্ষে দেইখা তো আমি আরেকটু হইলে কাইন্দাই দিছিলাম ! গোঁজামিল যাতে কমান যায় সেজন্য রিলেটিভিটি/হোল সংক্রান্ত হিসাব নিকাশ বা কল্পনা করছে ব্ল্যাক হোল শব্দের জনক জন হুইলারের কচি ছাত্র ছোট্ট সোনা কিপ থর্ন ।
ওয়ার্মহোল কেন ? ব্ল্যাকহোলে ঝাঁপ দেওয়া কেনো ? গ্র্যাভিটির ইকুয়েশন কেন ? এগুলা বললে মুভির মজা নষ্ট হইয়া যাবে । এই কারণে এইটা রিভিউ না , ট্রেইলারের মত বললাম ।
অনেকেই বলছে হলে গিয়া না দেখলে মজা মহাকাশের দৃশ্যগুলি দেইখা মজা পাইবেন না । আমার মতামত সিম্পল । নোলানের মুভি বুঝতে হইলে প্রতিটা দৃশ্য মুখস্থ রাখতে হয় নাইলে শেষের প্যাচখেলায় বেকুবের মত চাইয়া থাকতে হয় । যার স্মৃতি আমার মত দুর্বল অথবা একটা দৃশ্য একবারে বুঝতে পারেনা তার জন্য ঘরে বসে দেখাই উত্তম । হালায় এত খারাপ রীতিমত পরাশুনা করতে বাধ্য করে।
আপাতত মজার একটা তথ্য দেই , আমার চিন্তায় সর্বকালের সেরা ইনসেপশন না ইন্টারস্টেলার তা নিয়া বিতর্ক থাকতে পারে ; কিন্তু ইন্টারস্টেলার অস্কার নমিনেশন-ই পায়নাই ! বেশকিছুদিন গালি দেওয়া বন্ধ রাখছি , এল্লেগা গলার আগায় আইসা থাকা সত্ত্বেও গালিডা দিলাম না । সমস্যা নাই , ভ্যান গঘ আর পিকাসোরেও কেউ জিবদ্দশায় বেইল দেয়নাই । দুই তিনশ বছর পরে যাইয়া মর্ম বুঝছে । অস্কারের আর্টফিল্মপ্রেমি আঁতেলসমাজ বেইল না দিলেই বরঞ্চ ইন্টারস্টেলার আসল মর্যাদা পাইবো ।

No comments:

Post a Comment